ব্রণ এবং এর প্রতিকার...
ব্রণ এবং এর প্রতিকার... ব্রণের অন্য নাম এক্নে (ACNE)। ব্রণ হচ্ছে আমাদের শরীরের ত্বকের ফলিকলের এক প্রকার রোগ। সাধারণত শুষ্ক এবং তৈলাক্ত দু’ধরনের ত্বকেই কমবেশি ব্রণের দেখা মেলে। তবে আনুপাতিক হারে তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরাই ব্রণ সমস্যায় বেশি ভোগেন।
বয়ঃসন্ধিকালে হরমোনের প্রভাবে ত্বকের ভেতর গ্রন্থি বেশি করে এক প্রকার তৈলাক্ত পদার্থ নিঃসরণ শুরু করে। এই তৈলাক্ত পদার্থ লোমকূপের গোড়া দিয়ে ত্বকে এসে যায়। তৈলাক্ত পদার্থ বেড়ে গিয়ে এবং এর নির্গমনের পথ বন্ধ হলে ব্রণ সৃষ্টি হয়ে থাকে। ব্রণ দেখতে বিভিন্ন রকম হতে পারে। গুটিগুটি, দানাদার, লালচে গোটা, পুঁজসহ দানা, বড় চাকা ইত্যাদি হতে পারে। ব্রণের সঠিক চিকিৎসা না হলে বাজে ধরনের কালো দাগ পড়তে পারে। এ ছাড়া মুখে ছোট ছোট ক্ষত বা গর্ত সৃষ্টি হতে পারে।
এ রোগটা মুখমন্ডলেই সাধারণত বেশি হয়। ব্রণ বেশিরভাগ সময়ে গালে, নাকে কপালে আর থুতনিতে হয়ে থাকে। অনেক সময় গলা, বুকে ও পিঠের উপরিভাগ আর হাতের উপরিভাগে এই ব্রণ হয়।
বয়ঃসন্ধিকালে এ রোগটা শুরু হয়। ১৮ থেকে ২০ বছরের ছেলেমেয়েদের মধ্যে এ রোগটা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। ব্রণ বা একনে শতকরা ৮০ ভাগ টিনএজারদের সমস্যা। তবে কিছু মেয়েদের ক্ষেত্রে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত ও এ রোগ দেখা যায় । ব্রণ হওয়ার বংশগত প্রভাব একটি অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ কারণ।যাদের ত্বক তৈলাক্ত ও মাথায় খুশকি আছে তাদের ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যারা ধুলোবালু ও রোদে বেশি বের হয় তাদেরও ব্রণ হতে পারে। কিছু কিছু ওষুধ ও জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িও ব্রণের তীব্রতা বাড়ায়।
ব্রণ দূর করার জন্য “অপরূপা” পারলারে ব্রণের বিশেষ প্যাক পাওয়া যায়। সব প্রকার স্কিনের জন্য “এডভানসড পিম্পিল এবং একনে ট্রিটমেন্ট কিট” খুবই ঊপকারি। মাসে একবার এই বিশেষ ফেসিয়াল এর মাধ্যমে ত্বকের ব্রণ দূর হবে।
কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি প্রচলিত আছে। নিচের ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো অনুসরন করতে পারেন। এইসব প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার পরেও যারা ব্রণের সমস্যায় ভোগেন তাদেরকে অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করতে হবে।
ঘরোয়া পদ্ধতি্তে ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করার প্রচলিত কিছু উপায়। এতে উপকার পেতেও পারেন।
১) কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুঁড়ো ব্রণের জন্য খুবই কার্যকর দুটো উপাদান। সমপরিমাণ বাটা কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুঁড়ো একত্রে নিয়ে এতে পরিমাণ মত জল মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করতে হবে। মিশ্রণটি এরপর ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষন পর শুকিয়ে গেলে মুখঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই মিশ্রণটি শুধুমাত্র ব্রণদূর করার কাজ করে না বরং ব্রণের দাগ দূর করতেও সাহায্য করে।
২)আপেল এবং মুধ এর মিশ্রণ হচ্ছে ব্রণের দাগ দূর করার সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া পদ্ধতি। প্রথমে আপেলের পেষ্ট তৈরি করে তাতে ৪-৬ ফোঁটা মধু মিশাতে হবে। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে এরপর মুখ ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি ত্বকের টানটান ভাব বজায় রাখেএবং কমপ্লেকশন হালকা করে। সপ্তাহে ৫-৬ বার এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনি কয়েক দিনের মধ্যে পরিবর্তনটা অনুভব করতে পারবেন।
৩)ব্রণের জন্য তুলসি পাতার রস খুব উপকারী। কারণ তুলসি পাতায় আছে আয়ূরবেদিক গুণ।শুধুমাত্র তুলসি পাতার রস ব্রণআক্রান্ত অংশে লাগিয়ে রেখে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।এরপর অল্প গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
৪)প্রথমে চন্দন কাঠের গুড়োঁর সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করুন। এরপর এতে ২-৩ ফোঁটা লেবুর রস মিশাণ। গোলাপজল অনেকের ত্বকের সাথে এডজাষ্ট হয় না।তারা সেইক্ষেত্রে গোলাপ জলের পরিবর্তে মুধ ব্যবহার করতে পারেন। এই পেষ্ট আপনার ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে। সপ্তাহে ৩-৪ দিন ব্যবহার করতে পারলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।
৫)এছাড়া রাতে শোয়ার আগে ডিমের সাদা অংশ ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় ম্যাস্যাজ করে সারারাত রাখতে পারেন। এটি আপনার ত্বকের খসখসে ভাব দূর করে। সবচেয়ে ভাল হয় যদি এর সাথে লেবুর রস যোগ করা যায়।আপনি এটি সারারাতও রাখতে পারেন আবার আধ ঘন্টা পরও ধুয়ে ফেলতে পারেন।